নতুন চাকরিতে জয়েন করার কিছুদিন পর থেকেই তানহা খেয়াল করছে তার হেয়ার ফল অনেক বেড়ে গেছে, আবার চুল অনেক রাফও মনে হচ্ছে। তানহার মতো সেইম সিচুয়েশন আরো অনেকেই ফেইস করে থাকেন। একে তো আমরা বিজি ডেইলি শিডিউলের কারণে প্রোপারলি হেয়ারকেয়ার করতে পারি না, তার ওপর পলিউশন, ডার্ট কিংবা বিভিন্ন হরমোনাল চেঞ্জের ফলে একের পর এক হেয়ার কনসার্ন দেখা দিতে শুরু করে। হেয়ার সাইক্লিং এমন একটি হেয়ারকেয়ার ট্রেন্ড, যেটি ফলো করলে আপনারা একইসাথে খুব সহজে হেলদি ও শাইনি হেয়ার পেতে পারবেন। হেয়ার সাইক্লিং ট্রেন্ড নিয়ে সবকিছু জানতে পারবেন আজকের ফিচার থেকে।
হেয়ার সাইক্লিং ট্রেন্ড কী?
এই সাইক্লিং ট্রেন্ড কিন্তু হেয়ার রিসেটিং নামেও পরিচিত। যখন প্রতিবার চুল ওয়াশ করার সময় হেয়ার টাইপ ও হেয়ার কনসার্ন অনুযায়ী ডিফারেন্ট প্রোডাক্ট ইউজ করা হয়, তখন সেই রুটিনটিকেই হেয়ার সাইক্লিং বলে। অর্থাৎ এই ট্রেন্ডে একটি প্রোডাক্টের বদলে কয়েকটি প্রোডাক্ট, যেমন, শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, হেয়ার মাস্ক হেয়ারকেয়ার রুটিনে ইনক্লুড করা হয়। এই রুটিনে হেয়ার ওয়াশের স্পেসিফিক দিনগুলোতে ডিফারেন্ট প্রোডাক্ট অ্যাপ্লাই করা হয়, আর মধ্যবর্তী দিনগুলো রেস্টিং ডে হিসেবে কাউন্ট করা হয়। এতে করে সব প্রোডাক্টের ম্যাক্সিমাম বেনিফিট পাওয়া যায়।
Image may be NSFW.
Clik here to view.
হেয়ার কেয়ার রুটিন এবং হেয়ার সাইক্লিংয়ের ডিফারেন্স কী?
আমরা সাধারণত হেয়ার ওয়াশ করার জন্য একটি শ্যাম্পু ও একটি কন্ডিশনারই ডেইলি বেসিসে ইউজ করি। কিন্তু প্রবলেম হলো এই একেকটি প্রোডাক্ট একেক ধরনের হেয়ার কনসার্নকে টার্গেট করে ফর্মুলেট করা হয়। আবার সেইম প্রোডাক্ট লম্বা সময় ধরে ইউজ করলে আমাদের স্ক্যাল্প ও হেয়ার ওই প্রোডাক্টগুলোর অ্যাকচুয়াল বেনিফিট পায় না। তাই যারা বিভিন্ন হেয়ার প্রবলেমে ভুগছেন, তাদের হেয়ার কেয়ার রুটিনে মাত্র একটি শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার মোটেই এনাফ নয়। তাদের জন্য হেয়ার সাইক্লিং হতে পারে একদম পারফেক্ট সল্যুশন।
হেয়ার সাইক্লিংয়ের বেনিফিটসগুলো কী?
হেয়ার সাইক্লিংয়ের মুল বেনিফিট হলো এটি ফলো করলে মাল্টিপল হেয়ার কনসার্ন সলভ করা যায়। যেমন ধরুন, আপনার যদি ড্যানড্রাফ ও ফ্রিজি হেয়ারের প্রবলেম থাকে, তাহলে আপনি এই প্রবলেমগুলো টার্গেট করে ফর্মুলেট করা দু’টো সেপারেট প্রোডাক্ট অলটারনেট করে ইউজ করতে পারবেন। এতে করে অল্প সময়েই আপনার ড্যানড্রাফ যেমন কমবে, সেই সাথে ফ্রিজিনেসও কমবে। সেই সাথে এটি আমাদের হেয়ার ফলিকলগুলোকে নারিশড ও স্ট্রং করে তুলতে হেল্প করে এবং স্ক্যাল্পে ব্লাড ফ্লো স্টিমুলেট করার মাধ্যমে হেলদি হেয়ার গ্রোথ প্রোমোট করে। শুধু তাই নয়, হেয়ার সাইক্লিংয়ের মাধ্যমে আমাদের স্ক্যাল্পের ন্যাচারাল অয়েল ব্যালেন্স করাও পসিবল হয়।
আবার অনেক সময় দেখা যায়, প্রোপারলি হেয়ার ওয়াশ না করার ফলে আমাদের স্ক্যাল্পে প্রোডাক্ট রেসিডিউ থেকে যায়, যা বিল্ড আপ হতে পরবর্তীতে স্ক্যাল্পে ইরিটেশন বা ইনফ্লেমেশন দেখা দিতে পারে। হেয়ার সাইক্লিং করা হলে এই প্রবলেমটি ধীরে ধীরে কমে যায় এবং স্ক্যাল্প হয়ে ওঠে আগের চেয়ে হেলদি।
Image may be NSFW.
Clik here to view.
হেয়ার সাইক্লিংয়ের বেসিক স্টেপগুলো জেনে নিন
হেয়ার সাইক্লিং করার আগে আপনাদের কিছু ফ্যাক্টর কনসিডার করতে হবে, যেগুলো বেস্ট রেজাল্ট পাওয়ার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, ন্যাচারাল হেয়ার টাইপ, হেয়ার টেক্সচার, প্রেফারড হেয়ার স্টাইল, ওয়েদার, হরমোন লেভেল, স্ট্রেস লেভেল ও অবশ্যই হেয়ার কনসার্ন। এই প্রতিটি ফ্যাক্টর কনসিডার করে প্রোডাক্ট চুজ করলে তা বেটার আউটপুট এনে দিতে অনেক হেল্প করবে। চলুন এবার জেনে নেয়া যাক হেয়ার সাইক্লিংয়ের স্টেপগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত।
ফার্স্ট ওয়াশঃ ডিটক্সিং ও ময়েশ্চারাইজিং
হেয়ার সাইক্লিং করার জন্য উইকে যখন প্রথমবার হেয়ার ওয়াশ করবেন, তখন প্রোডাক্ট হিসেবে শুরুতেই নিজের পছন্দের ব্র্যান্ডের একটি ক্ল্যারিফায়িং শ্যাম্পু ও স্ক্যাল্প স্ক্রাব বেছে নিন। ক্ল্যারিফাইয়িং শ্যাম্পুতে ৮০ থেকে ৯০ পারসেন্ট পানি এবং হেভি সারফেকট্যান্ট, যেমনঃ অ্যামোনিয়াম সোডিয়াম লরাইল সালফেট, ক্লোরাইড থাকে। এটি ইউজ করা হলে ডার্ট, প্রোডাক্ট রেসিডিউ কিংবা যেকোনো ইমপিউরিটিজ ভেতর থেকে ক্লিন হয়ে যায়। তবে অবশ্যই অল্প পরিমাণে ইউজ করবেন। অন্যদিকে স্ক্যাল্প স্ক্রাব আমাদের হেয়ার স্ক্যাল্পকে ভেতর থেকে এক্সফোলিয়েট করে, গ্রিসিনেস দূর করে এবং স্ক্যাল্পের ইচিনেস কমায়। এ প্রোডাক্টগুলো ইউজ করার পর চুলের ময়েশ্চার রিস্টোর করতে ভালো কোয়ালিটির একটি কন্ডিশনার ও হেয়ার মাস্ক ইউজ করতে ভুলবেননা।
সেকেন্ড ওয়াশঃ রিপেয়ারিং
যাদের চুলে ড্যামেজ রয়েছে, তারা হেয়ার সাইক্লিংয়ের সেকেন্ড স্টেজে, অর্থাৎ সেকেন্ডবার হেয়ার ওয়াশের সময় ড্যামেজড হেয়ার রিপেয়ার করতে ক্যাপাবল এমন শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার বেছে নিন। মার্কেটে একটু খুঁজলেই আপনারা ড্যামেজ রিপেয়ারিং হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্টস খুঁজে পাবেন। চাইলে হেয়ার ওয়াশের পর একটি হেয়ার সিরামও ইউজ করতে পারেন।
Image may be NSFW.
Clik here to view.
থার্ড ওয়াশঃ প্রেপ ফর স্টাইলিং
হেয়ার সাইক্লিংয়ের লাস্ট সাইকেলে এমন প্রোডাক্ট ইউজ করতে হবে যেগুলো আপনাদেরকে বেস্ট হেয়ার স্টাইলিং রেজাল্টস পেতে হেল্প করবে। এই স্টেজে আপনাদেরকে নিজেদের হেয়ার কনসার্ন ও প্রায়োরিটি বুঝে প্রোডাক্ট সিলেক্ট করতে হবে, যাতে করে হেয়ার স্টাইলিং করার সময় কোনো এক্সট্রা স্ট্রাগল করতে না হয় এবং নিজের পছন্দের হেয়ারস্টাইল করা পসিবল হয়। যেমন ধরুন, যদি আপনার ড্যানড্রাফের প্রবলেম থাকে, তাহলে অ্যান্টি ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু ইউজ করতে পারেন। সেই সাথে যদি কন্ডিশনার ইউজ করেন, তাহলে চুল সফটও হবে, আবার স্টাইলিংয়েও সুবিধা হবে।
আশা করি হেয়ার সাইক্লিং ট্রেন্ড নিয়ে আপনাদের আর কোনো কনফিউশন নেই। নিজের চুলকে হেলদি, শাইনি ও সফট করে তুলতে চাইলে এই ট্রেন্ডটি ফলো করে দেখতে পারেন। সেই সাথে সবসময় অথেনটিক ও হাই কোয়ালিটি প্রোডাক্টস ইউজ করা প্রয়োজন। অথেনটিক মেকআপ, স্কিনকেয়ার ও হেয়ারকেয়ার প্রোডাক্টস আপনারা পেয়ে যাবেন সাজগোজে। ভিজিট করুন সাজগোজের ওয়েবসাইট, অ্যাপ বা ফিজিক্যাল স্টোরে। সাজগোজের বেশ কয়েকটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। এই শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ন মল্লিকা, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ারে ও চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টারে অবস্থিত। এই শপগুলোর পাশাপাশি চাইলে অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকেও কিনতে পারেন আপনার দরকারি বা পছন্দের সব প্রোডাক্টস।
ছবিঃ সাজগোজ।
The post হেয়ার সাইক্লিং ট্রেন্ড ফলো করে চুল করে তুলুন হেলদি ও শাইনি appeared first on Shajgoj.